নেতাজীর স্মৃতি আঁকড়ে জঙ্গলমহলের মাটি : ভাষন ও দিয়েছিলেন লালমাটিতে দাঁড়িয়ে

23rd January 2021 2:28 pm বাঁকুড়া
নেতাজীর স্মৃতি আঁকড়ে জঙ্গলমহলের মাটি : ভাষন ও দিয়েছিলেন লালমাটিতে দাঁড়িয়ে


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :  দেশ তখন উত্তাল। সারা বিশ্বে যুদ্ধের বারুদের গন্ধ। ভারতবর্ষের আপামর দেশবাসী স্বাধীনতা লাভের আশায় দেশ নেতৃত্বদের দিকে তাকিয়ে। একদিকে গান্ধিজীর নেতৃত্বে চলছে অহিংস আন্দোলন। অন্যদিকে ভারতবর্ষের বীর সন্তান সুভাষচন্দ্র বোস ভারতবর্ষের থেকে অনেক দূরে বসে গঠন করেছেন আজাদ হিন্দ ফৌজ। তিনি বুঝেছিলেন অহিংস আন্দোলন দিয়ে আর হিংস্র ইংরেজ শাসকদের রোধ করা সম্ভব নয়। চাই স্বহিংস্র আন্দোলন। পূর্ণ স্বরাজের অধিকারে পথে নামার ডাক দিলেন তার অনুগামীদের। ধেয়ে এলেন ইংরেজ সেনানীদের বিরুদ্ধে। 
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজীর অবদান মহীরুহ সমান। তিনি আছেন আপামর ভারতবাসীর হৃদয়ের অন্তঃস্থলে। তার জন্মদিন দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে পরাক্রম দিবস হিসেবে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর স্বাধীনতা সংগ্রামের কার্যকলাপের ইতিহাসে ভারত বর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো বাঁকুড়ার নামও জড়িয়ে রয়েছে; , যা বাঁকুড়াবাসীর কাছে বিশেষ গর্বের বিষয়। 
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু একবার নয় বেশ কয়েকবার বাঁকুড়াতে আসেন এবং শুধু বাঁকুড়া শহরতলী নয় বাঁকুড়া জেলা শহর থেকে বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত জঙ্গল মহলের খাতড়াতেও তিনি আসেন। ইতিহাস থেকে জানাযায়, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরে তিনি ১৯২৮, ১৯৩১,১৯৩৮ সালে আসেন। বাঁকুড়া শহরে তিনি আসেন ১৯৪০ সালের ২৭ শে এপ্রিল। স্বাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি এই বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী একবার বাঁকুড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসবের সূচনা করেন, যেটি বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয়ে। সুভাষ চন্দ্র তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামের কার্যকলাপের জন্য বিভিন্ন গোপন বৈঠক করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জনসভা করেন। ইতিহাসের তথ্য থেকে জানাযায় বাঁকুড়ার সেকেন্ড ফিডার রোডে কেশব চন্দ্র চৌধুরীর ধান কলে যে জনসভা করেন সেটিই বাঁকুড়ায় তাঁর শেষ জনসভা।
১৯২৮ খ্রীস্টাব্দে বাঁকুড়ার খাতড়াতে অনুষ্ঠিত বাঁকুড়া জেলা কংগ্রেসের তৃতীয় সম্মেলনে সুভাষ চন্দ্র বসুর নাম সভাপতি হিসাবে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়, কিন্তু তিনি সেবার আসেননি। কিন্তু তার পরের বছর অর্থাৎ ১৯২৯ সালে বাঁকুড়ার কোতুলপুরের গরুহাটতলায় জেলা কংগ্রসের চতুর্থ সম্মেলনে নিজেই যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং যোগদেন। এরপর দ্বিতীয়বার সুভাষ চন্দ্র বসু যখন বাঁকুড়ায় আসেন তখন তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, সালটা ১৯৩৮। সেই সময় বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভায় যোগদান করেন। অন্যদিকে ফরোয়ার্ড ব্লক গঠন করার পর ১৯৪০ সালে বাঁকুড়া সফরে আসেন এবং এই সময় সারা জেলা ব্যপী কর্মসূচী সারেন। জানাযায় ১৯৪০ সালের ২৭ ও ২৮ শে এপ্রিল বাঁকুড়ায় বিভিন্ন কর্মসূচী সারেন। এই সময় বাঁকুড়ার খাতড়াতে ২৮ শে এপ্রিল এক জনসভায় যোগদেন এবং বক্তব্য রাখেন, সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন জন্মেজয় সুবুদ্ধি। জানাযায়, সেই বিকালে হওয়ার কথা থাকলেও এত বেশি জনসমাগম হয় যে তার অনেক আগেই সভা করতেল হয়। আবার ওই সভায় যাওয়ার আগেই ইন্দপুরে একটি অনির্ধারিত সভায় তাঁকে ভাষন দিতে হয়। এই সফর ছিল তাঁর তৃতীয় সফর।





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।